অনলাইনে ইদানীং একটি হাস্যকর প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে যে, তুরস্ক নাকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে হ***ত্যা করতে চায়! হাসিও লাগে এসব শুনলে কারণ যারা ন্যূনতম জিওপলিটিক্স বোঝেন, তাদের
অনলাইনে ইদানীং একটি হাস্যকর প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে যে, তুরস্ক নাকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে হ***ত্যা করতে চায়! হাসিও লাগে এসব শুনলে কারণ যারা ন্যূনতম জিওপলিটিক্স বোঝেন, তাদের কাছে এই বিষয়টি কেবল হাস্যকরই নয়, বরং পাগলের প্রলাপ মনে হবে। পিলখানার তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার টাইমেই এই উদ্ভট গুজব ছড়ানোর পেছনে ভারতের দালাল বিএনপির ছাগুদের হাত রয়েছে।
জিওপলিটিক্যালি তুরস্ক এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, আর যেটা অন্য লেভেলের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিকভাবে। কাশ্মীর ইস্যুতে যখন অনেক প্রভাবশালী মুসলিম দেশ নিশ্চুপ থাকে, তখন তুরস্ক বারবার পাকিস্তানের পক্ষে এবং ভারতের বিপক্ষে জোরালো অবস্থান নেয়। অন্যদিকে, তুরস্ককে নিজেদের শত্রু মনে করে ইসরাইল। আর এটা কারোরই অজানা নয় যে, ভারত ও ইসরাইল আদর্শগতভাবে একে অপরের পরম মিত্র। সহজ কথায়, এই দুই দেশই মুসলিম বিশ্বের যেকোনো দেশের উত্থান ঠেকাতে মাথা ঘামায়।
এখন প্রশ্ন হলো, তুরস্ক নিয়ে ভারতের মাথা ব্যথার কারণ কী? যারা টুকটাক ধারণা রাখেন তারা জানেন, বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যে একমুখী নির্ভরতা কমিয়ে নতুন নতুন দেশের সাথে সম্পর্ক গড়ছে। বাংলাদেশের ওপর আগে থেকেই চীনের বড় ব্যবসায়িক প্রভাব ও অস্ত্র কারখানা রয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের সাথেও বর্তমান সরকারের নতুন করে ডিল হচ্ছে আর দূতাবাসের ঘটনা তো জানেন ই। ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশের বাজারে তুরস্কের জোরালো প্রবেশ দিল্লির জন্য বড় শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তুরস্ক বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে আধুনিক সরঞ্জামের জোগান দিচ্ছে এবং ড্রোন প্রযুক্তি ও ডিফেন্স সিস্টেমে সহায়তা করছে। এর চেয়েও বড় বিষয় হলো তুরস্ক বাংলাদেশে উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাচ্ছে। যদি তুরস্কের সহায়তায় বাংলাদেশে বিশ্বমানের হাসপাতাল ও চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরি হয়, তবে ভারতের চিকিৎসা বাণিজ্যে বিশাল ধস নামবে, যা দিল্লির পেটে লাথি পড়ার শামিল।
এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই ভারতীয় লবিস্ট এবং বিএনপির ভেতরে থাকা কিছু ভারতপন্থী দালাল এই গুজব সাজিয়েছে। তারা জানে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ তারেক জিয়া এবং বিএনপিকে সমর্থন করে। তাই যদি প্রচার করা যায় যে তুরস্ক তারেক জিয়াকে হত্যা করতে চায়, তবে সাধারণ মানুষ আবেগের বশবর্তী হয়ে তুরস্কের বিপক্ষে চলে যাবে। এটি মূলত এক ঢিলে দুই পাখি মারার ভারতীয় চক্রান্ত। এভাবে একদিকে তুরস্কের ভাবমূর্তি নষ্ট করা, অন্যদিকে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল রাখা।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, তুরস্কের মতো একটি দেশ, যারা মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের কথা বলে এবং পাকিস্তানের মিত্র, তাদের তারেক জিয়ার মতো একজন নেতাকে টার্গেট করার কোনো রাজনৈতিক বা কৌশলগত কারণ নেই। আর তুরস্কের এই কাজ করার ইচ্ছা থাকলে ব্রিটেনে গিয়েই করে আসতো। এসব কিন্তু গোয়েন্দা বিভাগের কাছে অতটা জটিল না। তো সহজে বললে এটা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র (RAW)-এর শয়তানি ন্যারেটিভ যা কিছু দালালদের দিয়ে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে।
যারা চোখ-কান খোলা রাখেন, তারা সহজেই বুঝবেন যে এই প্রোপাগান্ডা টিকবে না। বাংলাদেশের মানুষ এখন অনেক সচেতন। ভারতের দালালি করে বা মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে তুরস্কের সাথে বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও কৌশলগত সম্পর্ক নষ্ট করা সম্ভব নয়।